বদলগাছীতে অসুস্থ কুকুরের উপদ্রব: নেই জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন, আতঙ্কে এলাকাবাসী


Ruhul Amin প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২২, ২০২৫, ৮:৪১ অপরাহ্ন / ১০০০
বদলগাছীতে অসুস্থ কুকুরের উপদ্রব: নেই জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

সিয়াম সিদ্দিকী, বদলগাছী (নওগাঁ):

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা জুড়ে অসুস্থ ও ঘা-পচা কুকুরের অবাধ বিচরণে চরম ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় জনমনে দেখা দিয়েছে তীব্র উদ্বেগ।

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, উপজেলা পরিষদ চত্বর, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, থানার মোড়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আশপাশে এসব কুকুর ঘোরাফেরা করছে। শরীরের দগদগে ঘা থেকে নির্গত দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা।

স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা জানায়, “অসুস্থ কুকুরগুলো কখনো টয়লেটে ঢুকে পড়ে, আবার কখনো শ্রেণিকক্ষেও চলে আসে। এতে ভয়ে পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।”

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিষয়টি একাধিকবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানানো হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, কুকুরগুলোর ঘা-পচা অংশে মাছির উপদ্রব বেড়েছে, যা আশপাশের দোকান ও খাবারে উড়ে গিয়ে পড়ছে— এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাদ্র থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত কুকুরের প্রজনন মৌসুম। এ সময় কুকুর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং কামড়াকামড়ির কারণে শরীরে ঘা সৃষ্টি হয়। চিকিৎসা না হলে তা পচে যায় ও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। কামড়ের মাধ্যমে জলাতঙ্কও ছড়াতে পারে।

এলাকাবাসী বলেন, “সর্বশেষ কবে কুকুরকে জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়েছে তা কেউ জানে না। আবার কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হলে চিকিৎসার ভ্যাকসিনও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাওয়া যায় না।”

ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন,

“কিছু কুকুরের চিকিৎসা আমরা করেছি। তবে রাস্তার কুকুর চিকিৎসা করা ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এদের জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া থাকে না। বর্তমানে টিকা দেওয়ার কোনো বাজেটও নেই। প্রশাসন বাজেট দিলে আমরা সেবা দিতে প্রস্তুত।”

 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রিপা রানী বলেন,

“কুকুর নিধনের কোনো নির্দেশনা নেই। তবে কেউ অসুস্থ কুকুর নিয়ে এলে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করার ব্যবস্থা করছি।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কানিস ফারহানা বলেন,

“বর্তমানে র‍্যাবিসের কোনো টিকা আমাদের কাছে নেই। গত ছয় বছরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধে কোনো প্রকল্প বা নির্দেশনাও চোখে পড়েনি।”

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান ছনি বলেন,

“কুকুর নিধন বিষয়টি সংবেদনশীল। তবে অসুস্থ কুকুরের চিকিৎসা ও জলাতঙ্কের টিকার ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করবো। পাশাপাশি মানুষের জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকার সরবরাহ নিশ্চিত করার বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”